1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

দালাল আর প্রভাবশালী খপ্পড়ে শেরপুরের ৬ লেন মহাসড়ক প্রকল্প

  • আপডেট টাইম : সোমবার, ৭ মার্চ, ২০২২
  • ৪০৪৫ বার পঠিত

শেরপুর প্রতিনিধি : দালাল আর প্রভাবশালী অর্থলিপ্সুদের কূনজর পড়েছে শেরপুরের ৬ লেন মহাসড়ক প্রকল্প। ইকোনোমিক জোনে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার পর এখন ঢাকা-সিলেট ৬ লেন মহাসড়ক নির্মাণ নিয়ে এই চক্র পুনরায় সক্রিয় হয়ে উঠেছে। মূল সড়ক পাশ কাটিয়ে নতুন করে বসতি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, স্কুল-মাদ্রাসার জমি অধিগ্রহণ চলছে।

জমি, পূর্ব পুরুষদের ঘরবাড়ি ও স্থাপনা হারানোর ভয়ে রয়েছেন লোকজন। অধিগ্রহণকৃত জমি দিয়ে কাজ শুরু হলে সাধারণ মানুষের হাজার কোটি টাকা লোকসানের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এলাকাবাসী দাবি জানিয়েছে, মূল সড়ক বাদ দিয়ে অন্যত্র জমি অধিগ্রহণ না করে মূল সড়কের পাশের জমি অধিগ্রহণ করা হোক। এর প্রতিবাদে রোববার এলাকাবাসী শেরপুর চত্বরে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ৬ লেন প্রকল্পের একজন কর্মকর্তা জানান, বর্তমানে যে শেরপুর ব্রিজ রয়েছে তার নীচ দিয়ে জাহাজ চলাচল করা যায়না। তাই এই ব্রিজটি ভেঙে ফেলার প্রস্তাব করা হয়েছে এবং মূল সড়ক থেকে সরিয়ে উত্তরপাশ দিয়ে জমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে। এই প্রস্তাব শুনে এলাকাবাসী জানান, এটি অবাস্তব একটি প্রস্তাব। এলাকার গরীব মানুষকে নি:স্ব করে প্রভাবশালীরা প্রকল্পের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে পুণরায় দালালি বাণিজ্যে মেতে ওঠছে। আমরা তা হতে দেবো না।

এদিকে অনেকেই জানিয়েছেন, এলাকার মানুষ যাতে এর প্রতিবাদ না করে সেজন্য লোকজনকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। পুলিশ, র্যা ব থেকে শুরু করে প্রশাসনের ভয় দেখানো হচ্ছে। তবে এলাকার মানুষ জানিয়েছেন, আমাদের ন্যায্য দাবি আদায়ে যেকোন পরিস্থিতি আমরা মোকাবেলা করতে প্রস্তুত।

সরেজমিন পরিদর্শনে জানা যায়, মৌলভীবাজার, সিলেট ও হবিগঞ্জ এই জেলার মোহনা হলো শেরপুর। সরকারের ইকোনোমিক জোন নির্মাণের জন্য ২০১৩ সালে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার শেরপুর ও ব্রাহ্মণগ্রাম মৌজার ৩৫২ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়। এসময় স্থানীয় জমির মালিকরা অর্থনৈতিকভাবে যতোটুকু লাভবান হয়েছেন তার চেয়ে বেশি লাভবান হয়েছে দালাল ও প্রভাবশালীরা। একটি দালালচক্র জেলা প্রশাসন ও ভূমি অফিসের এক শ্রেণির দুর্ণীতিবাজ ও অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে দলিল বাণিজ্যে মেতে ওঠে। এই চক্রটি তখন ইকোনোমিক জোন থেকেই শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন।

স্থানীয়রা জানান, এই চক্রটি পুণরায় দলিল বাণিজ্যের পাঁয়তারা শুরু করেছে। ইকোনোমিক জোনের অধিগ্রহণে এলাকার মানুষ প্রথম দফা নি:স্ব হয়েছে আর এখন ৬ লেন মহাসড়ক নির্মাণে দ্বিতীয় দফা নি:স্ব হওয়ার দ্বারপ্রান্তে রয়েছে।

পরিদর্শনে দেখা যায়, ৬ লেন মহাসড়ক নির্মাণের অধিগ্রহণের নিমিত্তে ইতিমধ্যে শেরপুর ও ব্রাহ্মণগ্রাম মৌজার মসজিদ, মাদ্রাসা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ঘরবাড়ি, বড় বড় মার্কেটসহ বিভিন্নস্থানে লাল রঙ দিয়ে চিহ্ন ও নম্বর লিখে রেখেছে।

এলাকার আব্বাছ আলী জানিয়েছেন, আমার পরিবার পথে বসে যাবে। অধিগ্রহণ করে সরকার টাকা দিলেও এই টাকা প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্থরা পায়না। ইকোনোমিক জোন নির্মাণের জন্য অধিগ্রহণের সময় এই অবস্থার সৃষ্টি হলে অনেক গরীব মানুষ আজ নি;স্ব হয়েছেন বলে তিনি জানান। আব্বাছ বলেন, আমরা মনে করি ৬ লেন করার জন্য আমাদের এই দিকে আসার কোন প্রয়োজন নেই। মূল সড়কের দুইপাশ দিয়ে জমি অধিগ্রহণ করলেই এই অবস্থার সৃষ্টি হতোনা।

বর্তমান মূল সড়কের উত্তরপাশে বজলু মিয়া নির্মাণ করছেন নতুন একটি বহুতল মার্কেট। তিনি ব্যাংক থেকে ৯ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে এই কাজ করছেন। বজলু মিয়া জানান, অধিগ্রহণ করার জন্য আমার এই ভবনে লাল চিহ্ন দেওয়া হয়েছে। যদি অধিগ্রহণ হয় তখন আমার এই খবন ভেঙে ফেলা হবে। এতে আমি কোটি কোটি টাকার লোকসানে পড়বো। আর ব্যাংকের ঋণই কিভাবে পরিশোধ করবো।

এখানের কয়েক বিঘা জমি ও দোকানপাটের মালিক হাজী সৈয়দ লিয়াকত আলী। তিনি  জানান, ইতিমধ্যে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ জমি-জমা অধিগ্রহণের জন্য লাল চিহ্ন দেওয়া হয়েছে। বিগত সময়ে অধিগ্রহণের নামে আমি অনেক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি। এবার নতুন করে আবার চক্রান্ত শুরু হয়েছে। আমাদের নি:স্ব করে প্রভাবশালীরা পেট ভরবে তা আমরা মানবো না।

মৌলভীবাজার ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা (এলও) অর্ণব মালাকার জানান, আমরা যখন সরেজমিন তদন্তে গিয়েছিলাম তখন এলাকার অনেকেই মৌখিকভাবে অনেকেই অভিযোগ করেছেন। এবিষয়ে সরেজমিন যাচাই কাজ চলছে। অভিযোগ নিষ্পত্তি করবে সরকারের প্রত্যাশী সংস্থা বলে তিনি জানান।

এবিষয়ে ঢাকা-সিলেট ৬ লেন মহাসড়ক প্রকল্পের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী দেওয়ান কামরুল হাসানের নম্বরে ফোন করলে তিনি রিসিভ করেননি।

 

 

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..